স্টাফ রিপোর্টার, মোঃমাসুদ রানা, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
‘শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি।
হাসিনা এমন অবস্থা করেছে যে, এমপি হতে ভোট লাগেনি। বিনা ভোটে এমপি
হয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচন রাতেই করে ফেলা হয়েছে। ২০২৪ সালের
নির্বাচন নিজেরা নিজেরাই করেছে।’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয়
নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন।
সভায় আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে উল্লেখ করে
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মোশাররফ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার বিচার বাংলার
মাটিতেই হবে ‘আমরা একটি মামলাও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করিনি। স্বৈরাচারী
আওয়ামী সরকার পতনের আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনার নির্দেশে দেড় হাজার
ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। এই অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার নেতাদের
বিরুদ্ধে দুই শ’ মামলা করেছে নিহতদের পরিবার। নিশ্চয়ই এই সকল মামলায় বাংলার
মাটিতে শেখ হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক আদালতেও হাজির হওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে ওয়ারেন্ট দেওয়া হয়েছে।’
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে বিএনপির আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার বিকেলে উপজেলার রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা বলছেন, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর নিজ নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গাবালীতে এবিএম মোশাররফ হোসেনের প্রথম এই সভাকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ঢল নামে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রসঙ্গে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ইউনুসের নেতৃত্বের সরকারকে আমরা সহযোগীতা করতে চাই। কারণ আগামী দিনে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য অবাধ-সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।’ আওয়ামী লীগের
আমলে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এবং সংসদ নির্বাচনে ভোট মানুষ ভোট
দিতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচনে
প্রভাব বিস্তার করতে চায়। যার জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন,বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমরা তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা করবো। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকল নির্বাচন হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আমরা এককভাবে সরকার গঠন করবো না। আন্দোলনরত সকল দলগুলো নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবো।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহেনা, ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় এবং রেহেনার ছেলে ববি ৫৮ হাজার কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছে। খুন-গুম এবং টাকা চুরিসহ এমন কোন অপরাধ নেই যে শেখ হাসিনা
করেনি। তাই বোনকে নিয়ে ভারতে তাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে।’
এই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহমান ফরাজী এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হারুন হাওলাদার।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশুসরকার কুট্টি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী
কমিটির সদস্য হাসান মামুন বক্তব্য রাখেন।