স্টাফ রিপোর্টার, মোঃ মোস্তাকিম বিল্লাহ, ডিমলা
নকলনবিশদের জাতীয়করনের দাবিকে যৌক্তিক বলে মনে করে নকল নবিশদের চলমান আন্দোলনের সাথে একাত্বতা ও সহমত পোষন করায় সকল নকল নবিশের পক্ষ থেকে ডিমলা সাব-রেজিস্ট্রার স্যারকে ধন্যবাদ। তিনি বলেন
অসহায় নকলনবিশদের চাকরী জতীয়করনের দাবি যৌক্তিক বলে মত প্রকাশ করেন নীলফামারী জেলার ডিমলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার কে এম সুজা উদ্দিন।তিনি বলেন বাংলাদেশে এন বি আর এর পর দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান হলো নিবন্ধন অধিদপ্তর।অথচ আমরা দেখছি সেই নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতাধীন নকল নবিশরা অত্যন্ত মানবতার জীবন যাপন করছে। তারা যে জাতীয়করণের জন্য আন্দোলন করিতেছে সেই আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক। আমার মতে নকল নবিশদের দাবিকে সরকারের বিবেচনা করে দেখা উচিত।ভূমির স্বত্ব তৈরি হয় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে । মূল_দলিল থেকে ভলিয়মে অবিকল নকল করে থাকেন নকলনবিশগণ । সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এই নকলনবিশগণের মাধ্যমেই জনগণের ভূমির স্বত্বের স্থায়ী_রেকর্ড সৃষ্টি হয় । স্থায়ী রেকর্ড প্রস্তুতকারী এই নকলনবিশগণ বে- সরকারি ভাবে চুক্তির ভিত্তিতে এই কার্যালয়ে কাজ করে থাকেন । সাব-রেজিস্ট্রি অফিস একটি সরকারি কার্যালয় । এই সরকারি কার্যালয়ে জনগণের ভূমির স্বত্বের স্থায়ী রেকর্ড তৈরি হচ্ছে বে-সরকারি লোকজনের মাধ্যমে । ভূমির স্বত্বের মতো গূরুত্বপূর্ণ রেকর্ড বে-সরকারি লোকজনের মাধ্যমে প্রস্তুত করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এখানেই নকলনবিশগণের চাকুরি জাতীয়করণের প্রধান যৌক্তিকতা নিহিত বলে আমি মনে করি।একজন নকলনবিশ যদি দৈনিক মান বজায় রেখে নিয়মিত কাজ করে থাকেন । তাহলে মাস শেষে তাঁর পারিশ্রমিক দাঁড়ায় ৭-১০ হাজার টাকা মাত্র । এখানেও রয়েছে শুভংকরের ফাকি। সময়মতো বালাম সরবরাহের অভাবে বছরের অনেক সময়ই তাদের কোনো কাজ থাকেনা। বসে -বসে তাদের দিন কাটাতে হয়।এই সময়ে তারা কোনো পারিশ্রমিকও পায় না।
সরকারের রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি মূল দলিল থেকে ভলিয়মে নকলকরণের জন্য নকলনবিশগণের পারিশ্রমিক প্রদানের উদ্দেশ্যে দলিলের সেবাগ্রহীতার নিকট থেকে এন ও এনএন ফি সংগ্রহ করা হয় । বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এন ও এনএন ফিস বাবদ আদায় করা হয়েছে ১৮৭ (একশত সাতাশি) কোটি টাকা প্রায় । এই সংগৃহীত টাকার মধ্যে এনএন অংশের ফিস ‘নকলনবিশগণের পারিশ্রমিক তহবিল’ শীর্ষক চলতি হিসাবে জমা করা হয়। প্রত্যেকটি অফিসে এই হিসাবের বর্তমান স্থিতি প্রায় ১ (এক) কোটি বা তদূর্ধ্ব টাকা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সারা দেশের রেজিস্ট্রি অফিসসমূহে প্রায় ১৬ (ষোলো) হাজার নকলনবিশ রয়েছে । এসব নকলনবিশগণকে সরকারী কর্মচারী হিসেবে আত্তীকরণ করা হলে তারা ১৮তম গ্রেডে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন । এক্ষেত্রে বছরে তাঁদের জন্য সরকারের ব্যয় হবে ৩০৪ (তিনশত চার) কোটি টাকা প্রায় । প্রতি বছর এন, এনএন, জি ও জিজি ফিস থেকে আদায় হবে প্রায় ২০০ (দুইশত) কোটি বা তদূর্ধ্ব টাকা । বছরে ১৫ (পনেরো) হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠানে সরকার যদি আর ১০৪ (একশত চার) কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ইহাতে সদাশয় সরকারের খুব আর্থিক ক্ষতি হবেনা বলেই অনুমিত হয়। নকলনবিশগণও এদেশের জনগণের অংশ। তাদের কল্যাণ ও জীবন ধারণের জন্য মৌলিক চাহিদা পূরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। সরকার আয় করে জনগণের কল্যাণে ব্যয় করার জন্যই। অতিরিক্ত ১০৪ (একশত চার) কোটি টাকা বিনিয়োগে যদি ১৬ হাজার পরিবারের ভাগ্য বদল হয়, তবে এর চেয়ে বিকল্প জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ সদাশয় সরকারের আর কি হতে পারে?