নোটিশ:
Welcome To Our Website...
ব্রেকিং নিউজ :
রাজশাহী জেলায় মাদক বিরোধী অভিযান এ আটক মাদক ব্যবসায়ী ভোলায়- অস্ত্র ও মাদক সহ ৬ব্যবসায়ী আটক আশুলিয়ার কাঠগড়া থেকে ১৫ বোতল ফেনসিডিল সহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার বীরশ্রেষ্ঠদের_জীবনী, ম্রো_ভাষায়_বীরশ্রেষ্ঠ জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সানুর বাসা থেকে ৮ জনকে গ্রেফতার ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ড. মোঃ আশরাফুর রহমান এর উপস্থিতিতে “পুনাক নেত্রকোণা’র শীতবস্ত্র বিতরণ মানবিক কাজে প্রশংসা পেলেন ময়মনসিংহবাসীর -ডিসি মুফিদুল আলম। চট্টগ্রাম লোহাগাডা উপজেলায়  শিক্ষক নুরুল ইসলামের ছোঁয়ায় উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে  মধ্য কলাউজান মদিনাতুল উলুম মহিলা মাদৃরাসা হেফজখানা ও এতিমখানা “পড়াশোনার মান উন্নয়ন ‘ ময়মনসিংহে ডিবির অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ছাত্রদল নেতা গ্রেফতার নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর “আমার স্বপ্ন” অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ

সুনামগঞ্জের মোঙলারগাঁওবাসীসহ আশপাশের গ্রামের মানুষ অঘটন থেকে রক্ষা পেলেন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২১ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার, আরিফুল ইসলাম মুরাদ, নেত্রকোনা
ধর্মপাশা ও জামালগঞ্জ দোয়ারাবাজারের মোঙলারগাঁওবাসীসহ আশপাশের গ্রামের মানুষ মঙ্গলবার বড় অঘটন থেকে রক্ষা পেয়েছেন। এলাকার স্থানীয় জনতা, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চেষ্টায় হাজারো উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত্ত করায় প্রশংসিত হয়েছেন সকলে। দোয়ারাবাজার কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া ফেসবুকের কমেন্টসকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত এই উত্তেজনা ছিল। অভিযুক্ত তরুণ আকাশ দাসকে বুধবার বিকালে আদালতে সোপর্দ করা হলে, আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। তবে মোঙলারগাঁওয়ে এখনো আতঙ্ক কাটে নি। নারীরাসহ বহু মানুষ এখনো গ্রামে ফিরে নি। অবশ্য পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে গ্রামে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় মোঙলারগাঁও গ্রামের হিন্দু হাটিতে গিয়ে দেখা যায়, অনেকের ঘরের দরজায় তালা ঝোলানো। কিছু পুরুষ মানুষ এসব ঘরে আসলেও পরিবারের নারী সদস্যরা আশপাশের গ্রামের স্বজনদের বাড়িতেই রয়েছেন। গ্রামে হিন্দু পরিবার ৯৫ টি। এরমধ্যে ২৫ টি পরিবারের নারীরা ওই সময় পর্যন্ত (বুধবার দুপুর একটা পর্যন্ত) বাড়ি ফিরেন নি। দুই-চারটি পরিবারের পুরুষ মানুষেরা ফিরেছেন। পুলিশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা গ্রামে অবস্থান এবং আশপাশের গ্রামের মুসলিম স¤প্রদায়ের গণ্যমান্যরা এসে তাদের নিরাপত্তার আশ^াস দেওয়ায় তারা বাড়িঘর ঘুচানোর কাজ করছিলেন। গ্রামে ঢুকার মুখেই স্কুল শিক্ষার্থী পাশের মাস্টার পাড়ার বাসিন্দা মাহদি হাসানের সঙ্গে দেখা। মাহদি জানালো, মঙ্গলবার রাতে ঘটনার সময়ও সে মোঙলারগাঁয়েই ছিল। এই শিশু শিক্ষার্থীর মন্তব্য এরকম ছিল,বড় মারামারি থাকি সকলে বাঁচচে। কীভাবে প্রশ্ন করতেই, তার উত্তর ছিল, নৈনগাঁওয়ের হুজুর, বিএনপি নেতা আব্দুল বারী চেয়ারম্যান, লায়েক মিয়া, বাহার মিয়াসহ কত মানুষ ফিরানিত (ফেরানোর জন্য) লাগছিলা, তারা কোন লাখান রক্ষা করছইন। সে জানালো, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর চেষ্টার কমতি ছিল না। পরে নৈনগাঁও মহিলা মাদ্রাসার মুহতামিম আব্দুল করিমের কাছে গিয়ে প্রশ্ন ছিল, আপনারা কীভাবে হাজারো মানুষকে শান্ত করলেন, তিনি বললেন, ক্ষুব্ধ হাজার হাজার মানুষ দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরে জড়ো হয়েছিলেন। এই পথ দিয়ে আসার সময় মানুষজনকে ধর্মীয় ব্যাখ্যা দিয়েই ফেরানোর চেষ্টা করেছি আমরা। পথ আগলে দাঁড়িয়েছি, বলেছি মুসলমানদেরই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে হবে, ইসলাম এসব হামলা মারপিঠ সমর্থন করে না, অপরাধ যে করেছে, আমরা তাঁর শাস্তি চাই, অন্য নিরপরাধ অমুসলিমদের নিরপত্তা দেবার দায়িত্ব সংখ্যাগুরু মুসলমানদের, সকলের উদ্দেশ্যে বলি ঠিক কী না, পরে সকলেই সায় দিয়েছেন, বেশিরভাগই ফিরে গেছেন। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যেটি কাঙ্খিত ছিল না। সকল আলেম ওলামা প্রশাসনের সঙ্গে মধ্যরাতব্যাপী দুর্ঘটনা এড়াতে কষ্ট করেছেন বলে জানান তিনি। নৈনগাঁওয়ের জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি আব্দুল খালিক ও তার ছেলে ভাতিজারা কীভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বিদের উপর হামলা ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন ব্যাখ্যা করে বললেন, যত মানুষ গ্রামে ঢুকেছে, সেই তুলনায় গ্রামের ঘরবাড়ির তেমন ক্ষতি হয় নি। আমাদের অনেক ছেলেরা পথে পথে দাঁড়িয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেছে। এরমধ্যে তাজুল ইসলাম, আল আমিন ও মাওলানা আব্দুল মজিদের চেষ্টার কথা উল্লেখ করেন তিনি। মোঙলারগাঁও ঢুকেও মনে হয়েছে বড় রকমের অঘটন থেকে রক্ষা পেয়েছেন এলাকাবাসী। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দানকারী আকাশ দাসের বাবা প্রফুল্ল দাস প্রবাসে (উমানে) আছেন ২৫ বছর হয়। স্ত্রী জোৎস্না দাস ভোরে বাড়ি ফিরে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে আছেন। কেউ ডাকলেও খুলছেন না। এজন্য এই ঘরের ভেতরে কী অবস্থা হয়েছে দেখা যায় নি। প্রফুল্ল দাসের প্রতিবেশী তার কাকাতো জেঠাতো ভাইদের ঘর (চাচাতো ভাইদের)। এরা সকলেই আকাশের উপর বিরক্তি প্রকাশ করলেন, ওর আচরণে সন্তুষ্ট নয় সেটি বুঝা গেল তাদের সকলের কথাবার্তায়। বললেন তাঁর অপকর্মের দায় আমাদের নিতে হচ্ছে। নিজের ভাংচুরকৃত ঘর দেখিয়ে প্রফুল্ল দাসের নিকটাত্মীয় মানিক লাল দাস বললেন, দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত আধা কিলোমিটার দূরের জঙ্গলে ছিলাম। পরে টেবলাইয়ের এক বাড়িতে গিয়ে ওঠেছি। স্ত্রী ও মেয়ে ওখানেই আছে। আমার ঘরে এমন কিছু নেই যা ভাঙা হয় নি। পাশের ঘরের দিগেন্দ্র দাসও এভাবেই বর্ণনা দিলেন। গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, হামলাকারী বিক্ষুব্ধ জনতা ৫০/৬০ টি বাড়িতে গেলেও ঘরে ঢুকেছেন কাজল দাস, মানিক লাল দাস, হরিধন দাস, সতন দাস, সুবোধ দাস, অশেষ দাস, সুবোধ দাস, বাবুল দাস, মতিন্দ্র সুত্রধর ও পিন্টু দাসের। ঘটনার সময় সুবোধ দাস (৬০) আহত হয়েছেন, তাকে রাতেই সেনাবাহিনীর সদস্যরা দোয়ারাবাজার হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। অন্তঃসত্ত¦া রুমি রানী দাস দৌঁড়ে পালাতে গিয়ে আহত হন। তাকে রাতেই পরিবারের লোকজন সিলেটে নিয়ে গেছেন। এক্ষেত্রেও এলাকাবাসী সহায়তা করেছেন। বিক্ষুব্ধ জনতা যেসব ঘরে ঢুকেছেন ওই পরিবারগুলোর মধ্যে দুটি পরিবারের পারিবারিক দেবম-প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। ঘটনার পরপর রাতেই সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম, সেনা বাহিনীর সুনামগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লে. কর্ণেল নাফিজ ইমতিয়াজ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। গভীর রাত পর্যন্ত ওখানে থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নির্দেশনা দিয়েছেন তারা। বুধবার বিকালে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান দোয়ারাবাজার যান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল পৌঁনে পাঁচ টায়) সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দোয়ারাবাজারেই ছিলেন। দোয়ারাবাজার থানার ওসি মো. জাহিদুল হক জানিয়েছেন আকাশ দাসের বিরুদ্ধে দোয়ারাবাজার থানার সাবইন্সপেক্টর আরাফাত ইবনে শফিউল্লা বাদী হয়ে মামলা (সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২৮/২. ৩২/২, ৩৩/২, দ-বিধির ১৫৩, ৫০৪ ও ৫০৫খ ) দায়ের করেছেন। কোর্ট ইন্সপেক্টর আকবর হোসেন সন্ধ্যা ছয়টায় জানান, আকাশকে আদালত জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। তিনি জানান, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2024 দৈনিক দেশ প্রতিদিন
Design & Development By HosterCube Ltd.