মোঃ সফিউল আলম, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা):
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বৃদ্ধা শাহিদা বেগম হত্যার আড়াই মাস পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে শাহিদা বেগমের স্বামী আবদুল মমিন নিজেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেছে থানার ওসি হিলাল উদ্দিন আহমেদ। পুলিশ জানায়, ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া গ্রামে গত ৩ ফেব্রুয়ারি শাহিদা বেগমের লাশ বাড়ির টয়লেটের রিংয়ের মধ্যে বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার ছেলে মাছুম বিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আব্দুল মমিনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ২১ এপ্রিল পুলিশ আবদুল মমিনকে চৌদ্দগ্রাম থানায় নিয়ে আসে। সেখানে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শাহিদা বেগমকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন তিনি। পুলিশ জানায়, আবদুল মমিনের মা জীবিত। তার বয়স ১৩০-এর কাছাকাছি। তার মা চলাফেরা করতে পারেন না, তবে সুস্থ আছেন। মায়ের সেবা-যত্ন নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ঝগড়া হতো। আবদুল মমিনের স্ত্রী শাহিদা সবসময় শাশুড়ির সঙ্গে খারাপ আচরণ করতো। গালমন্দ করতো। স্ত্রী ও মাকে নিয়ে আবদুল মমিন নতুন বাড়িতে থাকতেন। মায়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় আবদুল মমিন শাহিদার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। ঘটনার দিন বিরক্ত হয়ে বালিশ দিয়ে স্ত্রী শাহিদার মুখ চেপে ধরেন মমিন। কিছুক্ষণ পর দেখেন শাহিদা নড়াচড়া করছে না। বুঝতে পারেন স্ত্রী আর বেঁচে নেই। পরে ভোররাতে স্ত্রীর লাশ কাঁধে করে বাড়ির পাশে টয়লেটের রিংয়ের ভিতরে রেখে ঢাকনা লাগিয়ে দেন। লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় শাহিদার পেটিকোটটি শরীর থেকে পড়ে যায়। পরে বাড়ির নলকূপে গোসল করে পেটিকোটটি বালতির মধ্যে রেখে ভোরে আবদুল মমিন মসজিদে চলে যান। মসজিদ থেকে এসে ছেলেকে ফোন দিয়ে বলেন, তোমার মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে মমিনের নতুন বাড়িতে এসে অনেক খোঁজাখুঁজির পর সকাল সাড়ে ৭টায় লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। শাহিদাকে খোঁজার সময় আবদুল মমিন সবার সঙ্গে ছিলেন। তাকে কেউ সন্দেহ করেনি।