রাশেদ ইমরান লিখন, কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামে জাতীয় নাগরিক পার্টির আয়োজনে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
৫ মে দুপুরে কুড়িগ্রামে মুকুল মিয়ার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় এক বিক্ষোভ সমাবেশ, যেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের বিচার এবং সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টির আয়োজনে এই কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
বিকেল ২টার দিকে কুড়িগ্রাম কলেজ মোড় পার্টি অফিস থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ মোড় দোয়েল চত্বরে গিয়ে সমাবেশে পরিণত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাশেদুজ্জামান তাওহীদ এবং প্রধান অতিথি ছিলেন মুকুল মিয়া। প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাগরিক পার্টির কুড়িগ্রাম জেলা সংগঠক মুকুল মিয়া বলেন, “ভারতের প্রেসক্রিপশনে আর বাংলাদেশ চলবে না। হাসনাতের উপর হামলা দেশের সার্বভৌমত্বের উপর হামলার সমান।” তিনি বলেন ফেসিষ্ট আওয়ামী নিষিদ্ধ করতে কোন বিলম্ব এ দেশের ছাত্র জনতা মেনে নিবে না।
বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য দেন,বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা আহবায়ক আবদুল আজিজ নাহিদ,
তিনি বলেন, “ইউনুছ সাহেব, আমরা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছি। কিন্তু ৯ মাস পার হলেও আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধে আপনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। এতে আমরা হতাশ।”
উলিপুরের যুব উইং নেতা শওকত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার বিদায় না হলে আমরা স্বাধীন হতে পারতাম না, আর আমাদের স্থান হতো জেলখানায়।”
যুব উইং নেতা জাহিদ হোসেন বলেন, “আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে।”
যুব উইং নেতা মাহমুদুল হাসান মিলন বলেন, “আওয়ামী নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।”
উলিপুর উপজেলার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক সাব্বির আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, “রক্তের সাথে বেইমানি করে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে পারে না।”
নেতা রাকিব হাসান, উলিপুর, বলেন, “আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।”
বৈষম্য বিরোধী নেতা শুভ্র বলেন, “হাসিনার ফাঁসি চাই।”
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক সাদিকুর রহমান বলেন, “বিডিয়ার হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের হত্যাযজ্ঞ শুরু করে, যার চূড়ান্ত রূপ দেখা গেছে ২০২৪ সালের হত্যাকাণ্ডে। ৫ তারিখে জনগণ তাদের সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে।”
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সদস্য সচিব ফয়সাল আহমেদ সাগর বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের মতামতের প্রয়োজন নেই। ইউনুছ সাহেব, আমরা রক্তের উপর দিয়ে আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছি, কিন্তু আপনি শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করছেন।”
নাগরিক পার্টির নেতা আব্দুর রাজ্জাক রাজ বলেন, “হাসনাতের উপর হামলা দেশের ছাত্র জনতার উপর হামলার সমান।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির আরেক নেতা হাফিজুর রহমান জুয়েল তার বক্তব্যে বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্তিতে থাকতে পারি না। যারা দিনে বিরোধিতা আর রাতে আঁতাত করেন, তাদের হুশিয়ার করছি—ছাত্র জনতা তাদের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াবে।”
নাগরিক পার্টি নেতা মাহমুদুল হাসান বলেন, “হাসনাতের উপর হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি চাই।”
জাতীয় নাগরিক পার্টি নেতা মোজাম্মেল হক বাবু, বলেন, “হাসনাতের উপর হামলা প্রমাণ করে আওয়ামী সন্ত্রাস এখনো শেষ হয়নি।”
বক্তারা তাদের বক্তব্যে দাবি করেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত রাজপথে গণআন্দোলন চলবে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।