রাশেদ ইমরান লিখন,কুড়িগ্রাম :
“জুলাই অভ্যুত্থানে ১১২ জন শহীদ শ্রমিকের রক্ত বৃথা যাবে না”—এই অঙ্গীকার নিয়ে কুড়িগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর শ্রমিক উইংয়ের আত্মপ্রকাশ সমাবেশ। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কুড়িগ্রাম আলিয়া কামিল মাদ্রাসার হলরুমে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শতাধিক শ্রমিক সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুড়িগ্রাম জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠক মো. মুকুল মিয়া।
সংগঠনক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, “কাজ করি আমরা শ্রমিকরা, আর পকেট ভরে মালিকরা। এভাবে আর চলতে পারে না।” তিনি শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হাফিজুর রহমান জুয়েল। তিনি বলেন, “ড. আতিক চান আপনারা যাতে ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারেন, ভালোভাবে পরিবার নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন, এর জন্য যা করতে হবে তা শ্রমিকদের সাথে নিয়েই করা হবে। এনসিপি চায় আপনারা শ্রমিক থেকে প্রধানমন্ত্রী, এমপি বা চেয়ারম্যান হোন।”
জেলা সংগঠক মো. মাসুম বলেন, “শ্রমিকদের জুলাই মাসে সাহসী ভূমিকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। এখন প্রয়োজন কুড়িগ্রামকে এগিয়ে নিতে শ্রমিকদের সক্রিয় সহযোগিতা।”
জেলার অন্যতম সংগঠক মোজাম্মেল হক বাবু তার বক্তব্যে বলেন, “১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শ্রমিকদের অবদান ছিল অসামান্য। কিন্তু তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানে শ্রমিকদের দৃপ্ত ভূমিকা ছিল। তাই এখন সময় এসেছে নিজেদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার।”
এনসিপি সংগঠক এডভোকেট বারেক বলেন, “দেশে ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে সব সময়ই ছিনিমিনি খেলা হয়। কাগজে-কলমে কিছু নিয়ম থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই। শ্রমিকদের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে আমরা সমষ্টিগতভাবে কাজ করব।”
জেলা সংগঠক মাহমুদুল হাসান জুয়েল বলেন, “ নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে আমাদের এনসিপির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
দিনার মিনহাজ ও লিটুও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। তাঁরা শ্রমিকদের মর্যাদা, অধিকার ও সম্মান রক্ষায় সংগঠিত হওয়ার ওপর জোর দেন।
সভাপতির বক্তব্যে মো. মুকুল মিয়া বলেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টি শ্রমিকবান্ধব রাজনীতিতে বিশ্বাসী। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায় এবং তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এনসিপি পাশে থাকবে।”
সমাবেশে শ্রমিক নেতারা তাদের বক্তব্যে শ্রমিক সমস্যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে সোচ্চার থাকার প্রতিজ্ঞা ব্যত্যয় করেন।
সমাবেশ শেষে কুড়িগ্রাম জেলার কিছু এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের এনসিপিতে আনুষ্ঠানিক যোগদান অনুষ্ঠিত হয়।