রাব্বি সরদার (মুন্সীগঞ্জ) :
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের আশেপাশে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্ষা শুরুর আগেই এভাবে নদী ভাঙ্গনের পিছনে অবাধে বাল্কহেড চলাচলকে দায়ী করছেন সচেতন মহল। নদীতে পানি কম থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন শত শত বাল্কহেড এই খাল হয়ে বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। এতে করে বাল্কহেডের ঢেউয়ে খালের দু-পারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীর পাড়ের মানুষ। কিছুদিন আগে ও বাল্কহেড নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বালিগাও বাজারের একটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও বাজারের দক্ষিণ পাশের খালের পশ্চিম পাড়ের একটি বাড়ির মধ্যে বাল্কহেড ঢুকে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া সামনে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির পশু গরু-ছাগলের ট্রলার এই খালের উপর দিয়ে চলাচল শুরু করেছে। বাল্কহেড চলাচলের কারণে এসব পশুবাহী ট্রলার দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গরু ব্যবসায়ীরা।
কয়েকজন গরু ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর কোরবানির পশুর হাটকে কেন্দ্র করে এই খাল দিয়ে গরু, মহিষ, ছাগলের শত শত ট্রলার চলাচল করে। এ বছরও গরুর ট্রলার চলাচল শুরু করেছে। তবে চিন্তার বিষয় হলো এই খাল দিয়ে অবাধে বাল্কহেড চলাচল করছে। এসব বাল্কহেড চলাচলের কারণে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এই খালে বাল্কহেড চলাচলে জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও বাল্কহেড চলাচল বন্ধ হয়নি। আমরা চাই দুর্ঘটনা এড়াতে এসব নিষিদ্ধ ঘোষিত অবৈধ বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করা হোক।
২০২৩ সালের ৫ আগস্ট ওই খালে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ১০ জন নিহত হওয়ার পরে এই খালে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন। কিন্তু বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরেও একটি কুচক্র মহল বাল্কহেড মালিকদের কাছ হতে চাঁদা নিয়ে ওইখালে বাল্কহেড পারাপারে সহায়তা করে আসছে।
এই খালে চলাচলরত একাধিক বাল্বহেড চালকের সাথে কথা বলে জানা যায় দীর্ঘদিন যাবত ওই খালে বাল্কহেড চালকদের কাছ হতে চাঁদাবাজি করে একটি সিন্ডিকেট। বাল্বহেড যাওয়ার সময় নগদ টাকা ঢিল মেরে ফেলে যায়। বাল্বহেড প্রতি ১হাজার থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা দিতে হয়। টাকার বিনিময় খালে নিষিদ্ধ ঘোষিত বাল্বহেড পারাপারের সহযোগিতা করেন। এইদিকে দুটি টোল প্লাজা থাকা সত্ত্বেও সরকারি কোনো জবাবদিহিতা না থাকায় প্রতিনিয়ত হচ্ছে দুর্নীতি এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এখনই যদি এদেরকে থামানো না যায় তাহলে দিন দিন আরো ভয়ংকর হয়ে উঠবে এই বাল্বহেড বালু মহল সিন্ডিকেট।
এবিষয়ে টঙ্গিবাড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।