নোটিশ:
Welcome To Our Website...
ব্রেকিং নিউজ :
বিশ্ব মানবাধিকারের প্রতিষ্ঠিত বাস্তবায়ন সংস্থার নতুন সদস্যদের কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠান নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জনাব প্রশান্ত কুমার রায়কে গতকাল গতকাল গাজীপুর থেকে গ্রেফতার সিলেটে শহীদ পরিবারকে বিএনপির সম্মাননা, গণতন্ত্রে ফেরার ডাক যশোরের ঝিকরগাছায় পুলিশের অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন সহ একাধিক মামলার আসামি রয়েল (৩২)কে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত রয়েল সদর ইউনিয়নের হাড়িয়াদেয়াড়া (চাতালপাড়া) গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে নালিতাবাড়ীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিএনপি’র সদস্য ফরম বিতরণ ও কার্যালয় উদ্বোধন মতবিনিময় ও সচেতনতামূলক সভা উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত হয় চকরিয়া পৌরশহরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান লালমাইয়ে যৌথবাহিনীর অভিযানে দুই মাদক কারবারি আটক চুয়াডাঙ্গায় ৩২টি হারানো মোবাইল উদ্ধার করে মালিকদের বুঝিয়ে দিল পুলিশ শান্তির শ্রীমঙ্গল শহরে আজ অশান্তির কালো ছায়া

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল দালালদের দৌরাত্ম্য অপরদিকে ঘড়ির কাঁটা ধরে চিকিৎসকদের দায়িত্ব

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫
  • ১৮৪ বার পঠিত

আসাদুজ্জামান মুরাদ, বরিশাল:

 

হাসপাতালের পরিচালক অনুপস্থিত থাকার কারণে দীর্ঘ দেড় মাস ধরে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হচ্ছে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল। গোটা দক্ষিণাঞ্চলবাসীর একমাত্র উন্নত চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হলেও প্রতিনিয়ত প্রতারণা আর ভোগান্তিতে পড়তে হয় চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশীদের। একদিকে দালালদের দৌরাত্ম্য অপরদিকে ঘড়ির কাঁটা ধরে চিকিৎসকদের দায়িত্ব পালন। দালালদের প্রধান টার্গেট থাকে কোনো রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হচ্ছে। আর চিকিৎসকদের প্রধান টার্গেট ব্যক্তিগত চেম্বার। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবরই বলে আসছে, হাসপাতালে দালালদের কোনো স্থান নেই। আর চিকিৎসকদের গাফিলতি কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
সরজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত না হলেও দালালরা নিজেদের হাসপাতালের কর্মী পরিচয় দিয়ে রোগীদের পিছু নিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের ইনকাম একটাই আর তা হলো রোগী এবং তাদের অভিভাবকদের হয়রানি করে টাকা আদায় করা। এ ধরনের রোগী হয়রানির সময় প্রশাসনের লোক থাকলেও তাদের নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। এছাড়া আয়া ও ট্রলিম্যানদের কমিশন পেয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালি করতে দেখা যায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, একজন আয়া ও ট্রলিম্যান প্রতিদিন দালাল নিয়ন্ত্রিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন নিচ্ছেন ২ হাজার টাকার উপরে। আর এতে প্রতারিত হচ্ছেন দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগী ও তার স্বজনরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, হাসপাতাল চত্বরে প্রশাসনের লোক রয়েছেন। তাদের চোখের সামনেই এসব কর্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে আয়া ও ট্রলিম্যান অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রোগ যতই গুরুতর হোক না কেন টিকেট না কাটলে তাকে কোনো ডাক্তার দেখতে আসেন না। এখানেও পোহাতে হয় ভোগান্তি। গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে এলে প্রথমেই দুর্নীতির শিকার হতে হয় জরুরি বিভাগে। যেমন ২৬ টাকার পরিবর্তে ব্রাদাররা নিচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। রোগীর স্বজনরা টাকার কথা চিন্তা না করে তাড়াতাড়ি ভর্তি করে নেন ওয়ার্ডে। এরপর শুরু হয় আয়া-বুয়া থেকে শুরু করে সব শ্রেণির কর্মকর্তার দৌরাত্ম্য। হাসপাতালের চারদিকে লেখা রয়েছে দালাল থেকে সাবধান। কিন্তু নিয়মকানুন যেন ঠিক এর উল্টো। দালাল ছাড়া কোনো কিছু কল্পনাও করা যায় না। জরুরি বিভাগ থেকে নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগীকে নিয়ে গেলে বকশিশের নামে চাঁদাবাজি শুরু করে ট্রলিম্যানরা। প্রতিবাদ করলে তাদের হাতে হয়রানির শিকার হতে হয় রোগীর স্বজনদের।
সূত্র জানায়, হাসপাতালের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা নিলেও এরা নিজেরা কাজ না করে বহিরাগতদের কাজ করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। রোগীরাও বাধ্য হচ্ছেন, বহিরাগতদের সেবা নিতে। এ সুযোগে রোগীদের জিম্মি করে চাহিদামতো অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এ টাকা থেকে হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার এবং নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীরাও কমিশন পাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব সরকারি কর্মচারী কোনো সেবা দেয়া ছাড়াই মাস শেষে নিয়মিত বেতন তুলছেন।
অভিযোগ রয়েছে, এরা হাজিরা দেন শুধু মাত্র নামে। জরুরি বিভাগে কতিপয় কর্মচারী হাসপাতালের ট্রলি দখল করে অর্থের বিনিময়ে রোগীদের ওয়ার্ডে নেয়ার কাজ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বহিরাগত ট্রলিম্যান জানান, প্রতি শিফটে তিনি প্রায় ৫০০ টাকার বেশি আয় করেন। অপরদিকে হাসপাতালকে ঘিরে শতাধিক অ্যাম্বুলেন্স গাড়িকে কেন্দ্র করে শত শত দালাল নিযুক্ত রয়েছে। তারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের প্রভাবিত করে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভাগিয়ে নিয়ে জিম্মি করে অর্থ আদায় করেন।
এছাড়া বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির এজেন্ট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা নিয়োজিত রয়েছেন হাসপাতালের আনাচে-কানাচে। জানা গেছে, এসব এজেন্ট চিকিৎসকদের উপঢৌকন দিয়ে তাদের পাশে বসে থেকে ওই কোম্পানির ওষুধ রোগীদের জন্য লিখে দিতে প্রভাবিত করেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা নাগাদ এ নিয়েও এক ধরনের ব্যবসা চলে হাসপাতালে। এছাড়া সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালে উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও কোনো কোনো চিকিৎসক ১০টার পর কাজে যোগ দেন। এমনও দেখা গেছে, ওষুধ প্রতিনিধিদের চাপে পড়ে চিকিৎসকরা রোগীদের দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে শেষে রোগী না দেখেই হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন দূর থেকে আসা রোগীরা। অবস্থা এমন, ওষুধ প্রতিনিধিদের চাকরি করেন চিকিৎসকরা।
এদিকে প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন জানান, তার স্ত্রীকে ইমার্জেন্সি থেকে প্রথমে ট্রলিতে করে ওয়ার্ডে নেয়া হয়। তখন ট্রলিম্যান তার কাছ থেকে জোরপূর্বক ১৫০ টাকা আদায় করেন। একই দিনে তিনতলায় প্রসূতি বিভাগে তাদের সিটের ব্যবস্থার জন্য সেখানে যান। আয়াকেও ৫০ টাকা দেয়া হলে সে হুইল চেয়ারে করে সেখানে আনতে রাজি হয় এবং তার বাচ্চা হলে ১ হাজার টাকা দাবি করেন গাইনি ওটির আয়ারা।
এসব ব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর মুঠোফোনে প্রতিবেদককে বলেন, তিনি যোগদানের পর থেকে অনেক কিছুই পরিবর্তন এনেছেন। তবে আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। তিনি কিছুদিন না থাকার কারণে এই সূযোগে এ ধরনের ঘটনা গুলো ঘটছে বলে জানান । তবে তিনি এসে এগুলো পরিবর্তন আনবেন। এছাড়া শের-ই-বাংলা হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার উন্নতমানের রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতি মাধ্যমে হাসপাতালকে সচল করে তুলবেন বলে জানান তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2024 দৈনিক দেশ প্রতিদিন
Design & Development By HosterCube Ltd.