মামুন আলম (রিপন), কুমিল্লা:
কুমিল্লার লাকসামে সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে আনা অবৈধ মোটরসাইকেলসহ আটক ৬ আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এইসময় তাদের কাছ থেকে ৫ টি মোটরসাইকেল, ৬ টি মোবাইল ও মোটরসাইকেল ক্রয়বিক্রয়ের নগদ ৪৯,২৫০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
জানা যায় কুমিল্লা জেলাসহ আসপাশের সীমান্ত দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মোটরসাইকেল একটি সিন্ডিকেটের সহায়তায় বাংলাদেশে এনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্রয়-বিক্রয় করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে লাকসাম ও আশপাশের এলাকায় হাজারেরও বেশি মোটরসাইকেল এমন অবৈধ পথে এনে আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, যার কমই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে আটক হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রেফতারকৃত আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে আন্তর্জাতিক সীমানা দিয়ে চোরাই পথে মোটরসাইকেল এনে লাকসামে ক্রয়বিক্রয়ের জন্য জংশন লেকপাড়ে একত্র হলে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তারা আটক হন।
আাসামীরা হলেন, লাকসাম উপজেলার খুন্তা হাজী বাড়ির আব্দুর রশিদের ছেলে সাইফুল ইসলাম সুমন(৩০), নাঙল কোট উপজেলার যোগী পুকুরিয়া গ্রামের মজিবুল হকের পুত্র মাহমুদুল হাসান নাহিদ(২৩), পেরিয়া গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে নুরুল ইসলাম শাহিন(২৫), ডাঃ আবু তাহেরের চেলে মোঃ নেছার উদ্দিন(২১), অহিদুর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম(২৫), উত্তর লাকসামের রফিকুল ইসলামপর ছেলে মোঃ তারেক। জানা গেছে এই মামলার এজহারভূক্ত আসামি সাইফুল ইসলাম সুমন (৩০) লাকসাম থানায় ১টি ও মাহমুদুল ইসলাম নাহিদ (২৩) এর নামে নাঙ্গলকোট থানায় ১টি মামলা রয়েছে।
লাকসাম থানায় করা এজহার সূত্রে জানা যায়, পুলিশের নিয়মিত টহলরত অবস্থায় ১২ জুলাই ২০২৫ তারিখ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জংশন লেক পাড় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় সীমান্ত থেকে চোরাই পথে আনা মোটরসাইকেল ক্রয়বিক্রয়ের খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর টহল টিমকে সাথে নিয়ে বিকেল ৩.৪০ মিনিটে যৌথ অভিযান পরিচালনা করলে আসামীগন দৌড়ে পালানোর সময় গ্রেফতার করা হয়েছে। পালানোর কারণ জিজ্ঞেস করলে আসামিরা চোরাই পথে মোটরসাইকেল ক্রয়বিক্রয়ের কথা স্বীকার করে।
এই সময় আসামী সাইফুল ইসলাম সুমন(৩০) এর দেহ তল্লাশি কালে ১টি পালসার মোটরসাইকেল, ১টি সামস্যাং মোবাইল, নগদ ১৫,৪৫০ টাকা, মাহমুদুল হাসান নাহিদ(২৩) এর হেফাজত থেকে একটি সুজুকি মোটরসাইকেল, ১টি রিয়েলমি মোবাইল, নুরুল ইসলাম শাহিন(২৫) এর কাছ থেকে ইয়ামাহা এমটি১৫, ১টি আইফোন প্রো ম্যাক্স, নগদ ৩৩,৮০০/- টাকা, মোঃ নেছার উদ্দিন(২১) ও শরিফুল ইসলাম(২৫) দ্বয়ের কাছ থেকে ১টি ইয়ামাহা আর১৫ মোটর সাইকেল, আাসামী নেছার উদ্দিনের কাছ থেকে ওপ্পো মোবাইল, শরিফুল ইসলামের কাচ থেকে রেডমি মোবাইল, মোঃ তারেক(৩০) এর কাছ থেকে ১টি ইয়ামাহা আর১৫ মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
লাকসাম থানা সূত্রে জানা যায়, আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ৫টি আদায়যোগ্য শুল্ক বা কর ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে আনা মোটরসাইকেল ক্রয়বিক্রয়ের জন্য বর্নিত ঘটনাস্থলে একত্রিত হয়েছে এবং জব্দ কৃত টাকা মোটরসাইকেল ক্রয়বিক্রয়ের টাকা বলেও স্বীকার করে।
এদিকে আসামীদের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র এই প্রতিবেদককে জানায়, আসামীদের মধ্যে কয়েকজন মোটরসাইকেল ক্রেতা না বুঝে ফেঁসে গেছে। ব্যাক্তিগত জীবনে তারা এলাকায় ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। এমন পরিস্থিতি বুঝতে পারলে তারা এই আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হতেন বলে তারা মনে করেন না।
এভাবে মোটরসাইকেল ক্রয় যে শাস্তিযোগ্য অপরাধ তা অনেকে উপলব্ধি করতে পারেনা বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে। তারা কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য এমন অবৈধ মোটরসাইকেল ক্রয় না করতে তরুন প্রজন্মকে অনুরোধ করে অভিভাবকদের সচেতন হবার তাগিদ দেন।
এই বিষয়ে লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামীদের গ্রেফতারের পর কোর্টে চালান করা হয়েছে।