নোটিশ:
Welcome To Our Website...
ব্রেকিং নিউজ :
সন্দ্বীপে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস /২৫ পালিত নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নবজাতকদের জন্য আইসিইউ চালুর ঘোষণা: জেলা প্রশাসকের মানবিক উদ্যোগ জামালপুর সদর উপজেলা এনজিও সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলায় ছাইফ এর উদ্যেগে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল চর রমনী মোহন ইউনিয়নে প্রবাসীর বাড়ি নির্মাণে আ.লীগ নেতাদের বাধার অভিযোগ কালিয়াকৈরে রাষ্ট্র সংস্কার দাবিতে বিএনপির ক্যাম্পেইন (T.C.B)টিসিবি,নতুন ডিলার নিয়োগ দেবে নিয়োগ পেতে যা যা লাগবে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত সন্দ্বীপে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ৬ বছরের শিশুর মৃত্যু নির্বাচন ও সংস্কার দুটিই হউক –নির্বাচন রোডম্যাপ দিলেই দেশের মানুষ কেবল আশ্বস্ত হবে ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁওয়ে দলের পাশাপাশি ভোটের মাঠও গোছাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৯ বার পঠিত

মানিক ইসলাম,ঠাকুরগাঁও:

 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ঠাকুরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতা আত্মগোপনে। দলের ন্যূনতম তৎপরতাও নেই। অন্যদিকে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির কার্যালয়টিতে এখন আর লোক ধরে না। কিছুদিন আগেও যে সব নেতা-কর্মী নানা ঝামেলা এড়াতে দলের কর্মসূচি থেকে দূরে থাকতেন, কার্যালয়টি এখন তাঁদের আনাগোনায় জমজমাট।
প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জামায়াত প্রকাশ্যে দলের কর্মকাণ্ড চালাতে না পারলেও এখন দলটির নেতা-কর্মীরা সরব। এর বাইরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঠাকুরগাঁও জেলার রাজনীতিতে সক্রিয় আছে। শহরে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের কখনো দেখা মিললেও দলটির কর্মকাণ্ড নেই। বিভিন্ন দাবি নিয়ে মাঝেমধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) দেখা মিললেও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের কোনো কর্মকাণ্ড নেই। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দৃশ্যমান কর্মকাণ্ডও নেই।
সব মিলিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলার রাজনীতির মাঠে এখন বিএনপি আর জামায়াত বেশ সক্রিয়। দল দুটি সংগঠনকে গোছানোর পাশাপাশি জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের মাঠও গোছাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী আসনে এখন বেশ সক্রিয়। সুযোগ পেলেই জনসংযোগের পাশাপাশি যোগ দিচ্ছেন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। বার্তা দিচ্ছেন ঐক্য আর শান্তির। আবার কেউ কেউ দিয়ে যাচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতিও। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ঠাকুরগাঁওয়ে শতাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছিল বিএনপির ৭ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে। কারাভোগ করতে হয়েছে অসংখ্য নেতা-কর্মীকে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে দলের কর্মসূচি থেকে অনেক নেতা-কর্মী নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন। কিন্তু এখন সেই দিন পাল্টেছে। গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ায় পর সেখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এখন সেই কার্যালয় ঘিরে দিনরাত চলে নেতা-কর্মীদের আড্ডা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিজ জেলা ঠাকুরগাঁও। এ ঠাকুরগাঁও জেলায় বিএনপির কর্মকাণ্ড তাঁর নির্দেশনাতেই পরিচালিত হয়। নানা কর্মসূচিতে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা চাঙা হলেও বিএনপির ঠাকুরগাঁও জেলা ও উপজেলার কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ রয়ে গেছে। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সবশেষ ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছিল। ২ বছর পরপর সম্মেলন আয়োজনের কথা থাকলেও কয়েক দফা তারিখ ঘোষণা করেও জেলা সম্মেলন করতে পারেনি দলটি। বিএনপির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক দল ও ছাত্রদল মাঠে সক্রিয় থাকলেও সংগঠন দুটি চলছে পুরোনো কমিটি নিয়ে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের মামলা-হামলা ও নির্যাতন উপেক্ষা করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাঠে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রাণ ফিরে এসেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন বলেন, ‘আগামী মাসের মাঝামাঝিতে ঠাকুরগাঁও জেলার সম্মেলন আয়োজন করা হবে। বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী যেসব সংগঠন মেয়াদোত্তীর্ণ, তা ঢেলে সাজানোর কাজ চলছে। দলকে নির্বাচনমুখীও করা হচ্ছে।’ ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ঠাকুরগাঁওয়ে প্রকাশ্যে সংগঠনের কর্মকাণ্ড চালাতে পারেনি জামায়াত। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নির্বিঘ্নে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পেরে উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীরা। দলটি তৃণমূলে সভা-সমাবেশ করছে। নেতারা ধর্মীয় ও সামাজিক নানা আয়োজনে যোগ দিয়ে জনগণের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে কাজ করছেন। জামায়াতের প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা, থানা ও জেলা কমিটি হালনাগাদ আছে। ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের আমির বেলাল উদ্দিন প্রধান বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সময়ে সাংগঠনিক কাজ প্রকাশ্যে করতে না পারলেও আমরা চালিয়ে গেছি। দলের কার্যালয় বন্ধ থাকলেও এলাকার বাড়িতে বাড়িতে জামায়াতের কার্যালয় গড়ে উঠেছিল। এখন সেই বাধা নেই। কর্মী-সমর্থকেরাও সাংগঠনিক কাজ নিয়ে সক্রিয় আছেন।’ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ঠাকুরগাঁও শহরের জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়টি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কার্যালয়ও। গ্রেপ্তার এড়াতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা আত্মগোপনে আছেন। ঠাকুরগাঁও জেলায় আওয়ামী লীগের ৮৭১ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে ১৮টি মামলা হয়েছে। সেসব মামলায় ১ হাজার ৬৩০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। এনসিপি ঠাকুরগাঁও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সদস্য সংগ্রহে কাজ চললেও তা দৃশ্যমান নয়। আওয়ামী লীগের মিত্র হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), ওয়ার্কার্স পার্টির কোনো কর্মসূচি দৃশ্যমান নয়। তবে আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও স্থানীয় নানা ইস্যুতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণ অধিকার পরিষদের তৎপরতা চোখে পড়ছে। এর বাইরে বিভিন্ন দাবি নিয়ে মাঝেমধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) তৎপরতা দেখা গেছে। যোগাযোগ করলে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক গোলাম মর্তুজা সেলিম বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এখনো কমিটি করা হয়নি। দলের সদস্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩ টি সংসদীয় আসন আছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নিয়ে ঠাকুরগাঁও-১, বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর ও রানীশংকৈল উপজেলার ২টি ইউনিয়ন নিয়ে ঠাকুরগাঁও-২ আসন। আর রানীশংকৈল ও পীরগঞ্জ উপজেলা নিয়ে ঠাকুরগাঁও-৩ আসন।
ঠাকুরগাঁও-১ আসনে ১৯৮৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১০টি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সাতবার, বিএনপি ২ বার ও জাতীয় পার্টি একবার জয়ী হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁকে ঘিরে দলের নেতা-কর্মীরা এলাকার গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে যাচ্ছেন। ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমাদের অভিভাবক। এই আসনে তাঁর কোনো বিকল্প নেই।’ এই আসনে জামায়াত কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ মহানগরীর সহ-সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেনের নাম ঘোষণা করেছে। তিনি এখন সামাজিক ও ধর্মীয় নানা আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2024 দৈনিক দেশ প্রতিদিন
Design & Development By HosterCube Ltd.