রাশেদ ইমরান লিখন, কুড়িগ্রাম:
“একাত্তরের পরে শুধু নেতার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি”—এমন মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও কুড়িগ্রাম-২ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ড. আতিক মুজাহিদ বলেন, “নেতারা শুধু নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন, এবার সময় এসেছে সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের।”
আজ ২৪ মে (শনিবার) বিকেল ৫ ঘটিকায় কুড়িগ্রাম জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির আয়োজনে জেলা পরিষদ মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সংগঠক ও প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
ড. আতিক মুজাহিদ বলেন, “কুড়িগ্রাম শহরের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং সরকারি হাসপাতালগুলোর অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছে। প্রতিবছর সামান্য বৃষ্টিতেই শহর জলাবদ্ধতায় অচল হয়ে পড়ে। তাহলে গত ১৫-২০ বছরে শহরের উন্নয়নে নেতারা কী করেছেন?”
তিনি আরও বলেন, “একজন নেতার রাজনীতি করার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মানুষের জীবনমান উন্নয়ন। দুর্নীতিবাজ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলছি, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করুন। দেশ ও দশের উন্নয়নই হওয়া উচিত আমাদের মূল লক্ষ্য।”
এছাড়াও তিনি কুড়িগ্রামে একটি মাল্টি-স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার স্থাপনের ঘোষণা দেন, যেখানে নারী, পুরুষ ও ছাত্র-ছাত্রীরা সময় অনুযায়ী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আয়-রোজগারের পথ খুলে নিতে পারবে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আসাদুল্লাহ আল গালিব। তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট বিদায়ের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত দেশের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়নের পথে। আমাদের আরও একটু শ্রম দিতে হবে, তাহলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।”
তিনি সাংগঠনিক দিক তুলে ধরে বলেন, “প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে এনসিপির সংযোগ তৈরি করতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে আমাদের বার্তা পৌঁছাতে হবে। তাহলেই জনগণের আস্থা ও সমর্থন নিয়ে আমরা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবো।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন কুড়িগ্রাম জেলা এনসিপির সংগঠক মুকুল মিয়া। তিনি বলেন, “পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়ে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হতে চাই। এখনো কিছু রাজনৈতিক দলে ফ্যাসিস্টদের প্রেতাত্মা বিরাজ করছে, যারা ভুলে গেছে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান।”
সভা সঞ্চালনা করেন জেলা সংগঠক রাশেদুজ্জামান তাওহীদ।
অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন উলিপুর উপজেলা সংগঠক সাখাওয়াত হোসেন, রাজারহাটের মুনিবুল, ফুলবাড়ির নাজমুল ফেরদৌস, চিলমারীর জাকিয়া জান্নাতুন, জেলা সংগঠক মাসুম মিয়া, আসাদুজ্জামান আসাদ, মাহমুদুল হাসান জুয়েল, মোজাম্মেল বাবু ও এডভোকেট আব্দুল বারেক প্রমুখ।
জেলা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও সভায় অংশগ্রহণ করে পরিবেশকে প্রাণবন্ত করে তোলে।