রেহেনা পারভিন – স্টাফ রিপোর্টার, পটুয়াখালী
পটুয়াখালী জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অধীন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে জিপি সহ বিভিন্ন আদালতে সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ তালিকায় ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার সুবিধাভোগকারীদের বাতিল করে যোগ্য ও দক্ষ আইনজীবীদের নিয়োগ দেয়ার দাবীতে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বিক্ষোভ অব্যাহত।
আজ ১৭ নভেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে জজকোর্ট ভবন ঘুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়ক হয়ে পুনরায় জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে এসে সমাবেশ করে।
এ সময় বক্তব্য রাখেন জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ্যাড. মোঃ মোহসীন উদ্দিন, সাধারন সম্পাদক
এ্যাড. শরীফ মোঃ সালাউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরিফ হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. জাকির হোসেন মঞ্জু মৃধা, সাবেক সাধারন সম্পাদক এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, ফোরামের সাবেক সহ সাধারন সম্পাদক এ্যাড. মো. মাকসুদুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ এ্যাড. মাসুদ হোসেন, প্রচার সম্পাদক এ্যাড. তৌফিক আলী খান কবির প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সলিসিটর/জিপি-পিপি (পটুয়াখালী) ৬২/২০২৪ (অংশ-১)-১৮৯ নং স্মারকে ১৩.১১.২০২৪ তারিখ
পটুয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অধীন বিশেষ জজ আদালত এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে আইন কর্মকর্তা উপ- সলিসিটর ( জিপি- পিপি) কর্তৃক জেলা জজ আদালতে নিয়োগকৃত সরকারী কৌসুলী মো. আবদুল্লাহ ইউসুফ একজন নন প্রাকটিশনার এবং খন্ডকালিন সাবেক বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের ফ্যাসিস্ট সরকারের পিপি এ্যাড. নুরজামাল মৃধার জুনিয়র হিসেবে কর্মরত ছিলো। তিনি ফৌজদারী নন প্রাকটিশনার এবং বিগত পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত আইনজীবী ও পৌরসভা, জেলা পরিষদের প্যানেল আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালনকরে ছিলেন। আব্দুল্লাহ ইউসুফ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের সক্রীয় কর্মী হিসেবে আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে কাজ করেছেন । তিনি আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নির্বাচনসহ সকল কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি একজন প্রতারক হিসেবে একাধিক এন আই এ্যাক্টের ১৩৮ ধারার মামলার আসামী ছিলেন এবং বর্তমানে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান। তিনি ১০/১১/২০২৪ তারিখ সেসন মামলা নং-৩৪৬/২০২২, ৩৪৮/২০২২ নং মামলার বাদী মোঃ আবদুস ছালাম কে আদালত প্রাঙ্গনে মারধর করিলে মোঃ আবদুল্লাহ ইউসুফের বিরুদ্ধে বিগত ইং ১১.১১.২০২৪ তারিখ একখানা দরখাস্ত দাখিল করেন। যা বর্তমানে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির ভিজিলেন্স কমিটিতে শো-কজ এর জবাব দাখিলের জন্য আছে। তিনি আওয়ামীলীগ এর পরিচয়ে বিগত ফ্যাসিষ্ট খুনি হাসিনা সরকারের আমলে মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে বহু অনৈতিক সুবিধা নিতেন। তার কোনো চেম্বার বা মহরার নেই। তার নিয়োগে ঐতিহ্যবাহী জেলা আইনজীবী সমিতির ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জেলা ও দায়রা জজ আদালত-এ ১নং ক্রমিকে মাকসুদুল হক আওয়ামীলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। তিনি পটুয়াখালী আওয়ামীলীগের বর্তমান কার্য নির্বাহী কমিটির ১৩নং সদস্য। তিনি আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের একজন সক্রীয় সদস্য।
সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর এর ২৫নং ক্রমিকে মোঃ মামুন খান গলাচিপা উপজেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ছিলেন। তিনি আওয়ামী আইনজীবী পরিষদেরও একজন সক্রিয় সদস্য। এ উল্লেখিত ব্যক্তিদের নিয়োগ বাতিল করে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও এর অধীন আদালত বিশেষ জজ আদালত এর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম সঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য দক্ষ, অভিজ্ঞ ও গ্রহনযোগ্য আইনজীবীদের নিয়োগ দেওয়ার দাবী করেন বক্তারা।
জেলার বিভিন্ন আদালতে আইন কর্মকর্তা নিয়োগের তালিকায় পতিত স্বৈরাচার খুনি হাসিনা সরকারের উল্লেখিত দোসরদের নাম বাতিল করে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারন সম্পাদক
শরীফ মোঃ সালাহউদ্দীনকে জেলা জজ আদালতে সরকারী কৌসুলী,
জেলা জজ আদালতে মো. আনোয়ার পারভেজকে অতিরিক্ত সরকারী কৌসুলি এবং জেলা ও দায়ারা জজ আদালতে সহকারী পাবিলক প্রসিকিউটর পদে
মোঃ মাইনুল ইসলাম রুবেলকে,
মোঃ জাহিদুল ইসলামকে,
মোঃ আলাউদ্দিন (২)কে,
মোঃ মেহেদী হাসানকে ও
মোঃ বশির উদ্দিনকে নিয়োগ দেয়ার জন্য বর্তমান সরকারের আইন উপদেস্টার কাছে জোর দাবী করেন বক্তারা। এ
দাবী না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে হুশিয়ারও করেন বক্তারা।