স্টাফ রিপোর্টার, সুমন আহমদ, সুনামগঞ্জ
সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জে’র প্রতিটা উপজেলা নবান্ন একটি উৎসব , একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী উৎসব হলো নবান্ন উৎসব। মাঠে মাঠে সোনালী ধানের সমারোহ, বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। নতুন আমন ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ। চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ধুম। ফলন যেমনই হোক, কৃষকের মুখে ধানকাটার গান মনে করিয়ে দেয় নবান্ন উৎসবের কথা।
অগ্রহায়ণ শব্দের অর্থ বর্ষ শুরুর মাস। আর অগ্রহায়ণের প্রথম দিনটিই বাংলাদেশে নবান্ন যাপনের দিন হিসেবে পরিচিত। দেশের প্রাচীনতম উতসবগুলোর একটি নবান্ন উৎসব।
কার্তিক পেরিয়ে নীরবে আবির্ভাব ঘটে অগ্রহায়ণের। একসময় বাঙালির নতুন বছর শুরু হতো অগ্রহায়ণ মাস দিয়ে, তাই এ মাসের নাম হয়েছে অগ্রহায়ণ। এ মাসের প্রথম দিনে উদ্যাপিত নবান্নই বাঙালির ঐতিহ্যবাহী শস্যোত্সব। বাংলার কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যেসব অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়ে থাকে, নবান্ন তার অন্যতম। নবান্নের শব্দগত অর্থ ‘নতুন অন্ন’। নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবই নবান্ন। সাধারণত, অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পরে এই উৎসব হয়। ঋতুবৈচিত্র্যে হেমন্ত আসে শীতের আগে। কার্তিক আর অগ্রহায়ণ মাস নিয়েই হেমন্ত ঋতু।
বাংলা অগ্রহায়ণ অষ্টম মাস হিসেবে বিবেচিত হলেও হেমন্ত ঋতুর দ্বিতীয় এ মাসের প্রথম দিনটিই বাংলাদেশের নবান্ন। বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব উদ্যাপন করার জন্য মেয়ে-জামাইসহ আত্মীয়দের আমন্ত্রণ করে নতুন চালের পিঠা ও পায়েস রান্না করে ধুমধামের সঙ্গে ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়। গ্রামের অপেক্ষা করেন বাপের বাড়িতে নাইওরে গিয়ে নবান্ন যাপনের জন্য। পিঠা, পায়েস, মুড়ি-মুড়কি আর নতুন চালের ভাতের সুগন্ধে ভরে ওঠে মন।
কার্তিক মাসের শুরু থেকেই দেশের বিস্তীর্ণ জনপদে ধান কাটা শুরু হয়ে যায়। এ সময়ে কোনো বাড়িতে দেখা যায় ঢেঁকিতে চাল কোটা হচ্ছে পিঠার জন্য, কোনো বাড়িতে তৈরি হচ্ছে পায়েস। বাঙালিরা বিশেষ লৌকিক প্রথা অনুযায়ী নতুন চালের নবান্ন নিবেদন করার প্রথা ছিল। বিশ্বাস করা হয়ে থাকে, নতুন ধান উৎপাদনে বিশেষ করে গ্ৰাম অঞ্চলের শীতের পিঠা হিসেবে প্রোচালিত ভাফা। তবে এসব প্রাচীন প্রথা এখন আর খুব একটা দেখা যায় না।
এবারের ধানের ফসল কৃষকে’র আনন্দ চো’য়া।