স্টাফ রিপোর্টার, মোঃ আরিফুল ইসলাম মুরাদ,
নেত্রকোনা
সুনামগঞ্জের হাওরের বিস্তৃত ক্ষেতজুড়ে সোনালী ধানের মৌ মৌ গন্ধ। দখিনা বাতাসে দোল খেলছে পাকা ধানের শীষ। ধানের সোনালী রঙ দেখে কৃষকের ঠোঁটে তৃপ্তির হাসি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে এবার সুনামগঞ্জে রোপা আমন ধানের ভালো ফলন হওয়ায় খুশি হাওরের কৃষকরা। আশানুরূপ ফলনে উৎপাদন খরচ মিটিয়ে লাভে আশায় চাষীরা। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। বিঘা প্রতি ১৫-২০ মণ ধান পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। ফলন ভালো হলেও ধানের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ধানের ন্যায্য দাম নির্ধারণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা। ধানের বা¤পার ফলনে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। সরকারিভাবে কৃষকদের বীজ, সারসহ প্রণোদনা দেয়ায় আমন চাষাবাদে এই সফলতা এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। রোববার (২৬ নভেম্বর) সকালে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা বিভিন্ন হাওরে সরেজমিনে গিয়ে পাকা ধানের সমারোহ দেখা যায়। বেশিরভাগ জমির ধান পেকে যাওয়া ধান কাটা শুরু করেছেন চাষীরা। আর সপ্তাহ দিন পরে পুরোদস্তুর ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তারা। এবার হাইব্রিড জাতীয় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বিঘা প্রতি ১৫-২০ মণ হারে ধানের উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কুরবাননগর ইউনিয়নের আমন চাষী বাবুল মিয়া বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হইছে। কার্তিক মাসে বৃষ্টি হওয়ায় উপকার হয়েছে। ধানে চিটার হার কম। কেয়ার প্রতি ১৮-২০ মণ পাওয়া যাচ্ছে। এখলাছুর মিয়া বলেন, ধানের ফলন তো ভালো হওয়ায় কৃষকরা খুশি। এখন যদি ধানের দাম ভালো না পাই তাহলে পরতায় পুষতো না। এখন উৎপাদন খরচ বেশি। তাই ধানের ন্যায্য দাম পাইলে আমরা বাঁচি। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার সুনামগঞ্জ জেলায় ৮৩ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিত রোপা আমনের চাষাবাদ হয়েছে। চালের দিক দিয়ে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লক্ষ ১৪ হাজার ৯৬০ মেট্রিকটন। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, আমন মওসুমের শুরুতেই অতিবৃষ্টিতে ধানের কিছু ক্ষতি হয়েছিল। তবে পুরো মওসুমে আবহাওয়া অনুকূলে ছিলো। তাই উৎপাদন আশানুরূপ হয়েছে। বেশির ভাগ হাওরের ধান পাকতে শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে হাওরের ১০ ভাগ জমির ধান কর্তন হয়েগেছে। আমরা আশা করছি যেভাবে ধান হয়েছে, তা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।